কুমিল্লার প্রথম মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং কর্নার
আবদুল্লাহ আল মারুফ।।
মানসিক স্বাস্থ্যের যত্নে কুমিল্লায় প্রথমবারের মতো মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং কর্নারের উদ্যোগ নিয়েছে একটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ কাউন্সেলিং কর্নার উদ্বোধন করা হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কুমিল্লায় এমন উদ্যোগ প্রথম। এই উদ্যোগের বিশেষ উপকারভুগী হতে পারে গ্রামের সাধারণ মানুষ। এতে হতাশা, অবসাদ ও দুশ্চিন্তা কেটে গিয়ে কমে যাবে আত্মহত্যাসহ বড় বড় রোগ।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, আসুন মন খুলে কথা বলি প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এই কর্ণার চালু করা হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং কর্ণার থেকে শুক্রবার এবং সরকারি ছুটির দিন ছাড়া যেকোন দিন মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারবেন যে কেউ। এতে কোন ফি বা মূল্য রাখা হবে না। যেসব রোগীদের চিকিৎসকরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়া, অস্থির, ও হতাশাগ্রস্থ দেখবেন তাদের এই সেবা দেয়া হবে। এছাড়াও এই কর্ণারের উদ্যোগে স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়ে সচেতনতামূলক সভা ও সেমিনার করার চিন্তা রয়েছে। যদি কারও উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে সেটির ব্যবস্থাও করে দেয়া হবে এই কর্ণার থেকে।
বরুড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামরুল হাসান সোহেল বলেন, শারিরীক সুস্থতার পাশাপাশি মানসিক সুস্থতার দিকটি ও আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। অনেক কারণেই মানসিক বিষন্নতা, অবসাদগ্রস্ততা, হতাশা আসতে পারে জীবনে। এই মানসিক সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা কারো সাথে কথা বলতে চাই না, কিন্তু এই সমস্যাগুলো খুব সহজেই সমাধান যোগ্য। আপনাকে আপনার প্রিয়জনের সাথে এই সমস্যাগুলো নিয়ে মন খুলে কথা বলতে হবে।
আপনার চিকিৎসকও আপনার প্রিয়জন। তাই আমাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স’র মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সেলিং কর্ণার এর নামকরণ করা হয়েছে, ” আসুন মন খুলে কথা বলি।”
কুমিল্লায় এমন উদ্যোগ প্রথম উল্লেখ করে কুমিল্লার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মুহাম্মদ নাজমুল আলম বলেন, গ্রামের মানুষ মানসিক রোগ বলতে কিছু আছে তা একসময় জানতো না। কুমিল্লায় মানসিক স্বাস্থ্যের দিক মাথায় রেখে নতুন এই উদ্যোগ প্রথম। আমরা প্রত্যেক উপজেলায় এটা চাকুর ব্যবস্থা করবো। কুমিল্লায় হাতে গোণা কয়েকজন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ আছেন। এই কর্ণারের মাধ্যমে আশা করছি এই সংকট কিছুটা হলেও লাঘব হবে। এই উদ্যোগ সারাদেশের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গুলোতে গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবী।
কর্নারটি উদ্বোধন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: কামরুল হাসান সোহেল। উপস্থিত ছিলেন জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন ডা. মো. শরীফুল ইসলাম, জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি ডা. মো. সাইদুল আনোয়ার, জুনিয়র কনসালটেন্ট এনেস্থিসিয়া ডা. জুলকারনাইন মজুমদার, মেডিকেল অফিসার (রোগ-নিয়ন্ত্রণ) ডা. তানজিম মজুমদার, মেডিক্যাল অফিসার ডা. নূরেন তাসকিন তুলি, নার্সিং ইনচার্জ এসএসএন মাজেদা বেগম ও এসএসএন মো. রবিউল হোসাইনসহ অন্যান্যরা।