ভোট উৎসবেও ভালো নেই ৫ শতাধিক দিন মজুর
আমোদ প্রতিনিধি।
রাত পোহালেই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ভোট। সবাই ব্যস্ত জয়- পরাজয়ের হিসেব নিয়ে। কে হবেন নগর পিতা।
মঙ্গলবার সকাল ৮ টা। ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যায় কুমিল্লা নগরীর প্রাণ কেন্দ্র কান্দিরপাড়ে। পাঁচ শতাধিক মলিন মুখ বসে আছে কাজের খোঁজে।এই উৎসবে তারা কেউ না। উৎসবের আমেজে ভাটা পড়েছে তাদের নিত্য দিনের আয়ের পথ। নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত নগরীবাসীর আজ কোন কাজের লোকের দরকার নেই।
তবুও আশায় বুক বেঁধে আছেন তারা যদি কেউ আসেন। তাদের সবার সামনে কোদাল ঝুড়ি। কাকডাকা ভোরে আসলেও সকাল ৯ টা পর্যন্ত কেউ আসে নি তাদের কাজে নিতে।
কাজের খোঁজে বসে থাকা এই মানুষগুলো দেশের উত্তরবঙ্গের। ঠাকুরগাঁও, নীলফামারী, সিলেট, হবিগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, চাপাইনবাবগঞ্জ থেকে কুমিল্লায় আসেন। প্রতিদিন যা আয় হয় তা থেকে কিছু খরচ করেন থাকা খাওয়ায়। বাকি টাকা একটু একটু করে জমিয়ে মোবাইল ফোন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে স্বজনদের কাছে পাঠিয়ে দেন।
ঠাকুরগাঁও থেকে গত তিনমাস আগে কুমিল্লায় আসেন আফজালুর রহমান৷ কাজের খোঁজে প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে চলে আসেন কান্দিরপাড়।
আজ মঙ্গলবার কান্দিরপাড়ে বসে ছিলেন ভোর ৬ টা থেকে ৯ টা পর্যন্ত কেউ আসেনি নিতে।
আফজল বলেন, কুমিল্লাত ভোট চলে। আমডারে কাজের লাইগ্গা কে নিবো। তারপরও বসি ছিলাম। আইজ কাজ না পাইলে বনরুডি খাম।
নীলফামারীর জলডাঙ্গার বশির মিয়া। থাকেন নগরীর বাইরে ধর্মপুর এলাকায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে চলে আসেন কান্দিরপাড়ে। আফজলের মতে তাকেও কেউ কাজে নেয় নি। মন খারাপ করে বসে থাকেন। কাজ না হলে মানুষের কাছে হাত পেতে খেতে হবে।
বশির বলেন, কাজ না পেলে কি করিম বাও। আইজ অবস্থা খারাপ। মনে অইনা কেউ কাজে লিবে। চাট্টি খাওনের লাইগ্গা কাম করি। আইজ দুই দিন হলো আয় রোজগার কমি গেছে।
পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ বলেন, আগামীকাল নির্বাচনের দিন এবং পরদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুরো নগরীকে ঘিরে থাকবে। কোন লোক জমায়েত করতে দেয়া হবে না।
এমন ঘোষণার পর মন তাদের আরো মন খারাপ। আরো একটি দিন তাদের কর্মহীন থাকতে হবে।
কুমিল্লা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকিয়া আফরিন বলেন, এই নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য আলাদা করে বরাদ্দ নেই। তবুও জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলে কিছু করা যায় কি না সে ব্যাপারে চেষ্টা করবো।