মাস্টারের সাথে ক্ষোভে জাহাজের ৭জনকে একাই খুন
তরকারিতে দেয়া হয় ঘুমের ওষুধ, অচেতনদের কোপানো হয় চাইনিজ কুড়ালে
প্রতিনিধি।।
চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীতে সারবহনকারী এমভি আল বাখেরা জাহাজে ৭ জন খুনের ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতার যুবক আকাশ ম-ল ওরফে ইরফান। সে জানিয়েছে জাহাজের মাস্টারের সাথে বেতন ও খারাপ ব্যবহারে ক্ষোভ থেকে এই ঘটনা ঘটায়। তাদো তরকারির সাথে ঘুমের ওষুধ দিয়ে অচেতন করে। পাে প্রথমে মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে খুন করে। ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে বাকিদেরও হত্যার উদ্দেশ্যে কোপানো হয়। এতে আরো ৬জন মারা যায়। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) এক প্রেস ব্রিফিং করে বিষয়টি জানিয়েছেন র্যাব ১১ কুমিল্লার উপ অধিনায়ক মেজর সাকিব হোসেন।
এ সময় আসামির কাছ থেকে একটি হ্যান্ড গ্লাভস, ব্যাগ, ঘুমের ঔষধের খালি পাতা, খুন হওয়া ব্যক্তিদের ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোনসহ ৭ টি মোবাইল ফোন ও রক্ত মাখানো একটি জিন্স প্যান্ট উদ্ধার করেছে।
গ্রেফতার আকাশ ম-ল ইরফান (২৬) বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট এলাকার জগদীশ ম-লের ছেলে।
র্যাব কর্মকর্তা সাকিব বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বেতন ভাতা না পাওয়া ও দুর্ব্যবহারের ক্ষোভ থেকে আকাশ মন্ডল ইরফান জাহাজের মাস্টার গোলাম কিবরিয়াসহ সবাইকে হত্যা করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইরফান জানান, জাহাজের বাজার করা ইরফান পাবনার একটি বাজারে নেমেছিল। সেখান থেকে তিনি ৩ পাতা ঘুমের ওষুধ কেনেন। যে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করা হয় সেটি আগেই জাহাজেই ছিল। কুড়ালটি জাহাজের নিরাপত্তার জন্য রাখা হয়েছিল।
র্যাব দাবি করে, ইরফান প্রথমে খাবারের মধ্যে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সবাইকে অচেতন করে। পরে হাতে গ্লাভস পরে চাইনিজ কুড়াল দিয়ে সবাইকে কুপিয়ে হত্যা করে। সবাইকে কোপানের পর নিজে জাহাজ চালিয়ে হাইমচর এলাকায় এসে অন্য একটি ট্রলারে করে পালিয়ে যান।
র্যাবের ভাষ্য, মাস্টার গোলাম কিবরিয়াকে হত্যার বিষয়টি অন্যরা জেনে জেনে যাবে তাই অন্যদেরও ইরফান হত্যা করেন। ইরফান ছিলেন ওই জাহাজের সহায়ক। বাজার ও রান্নায় সহযোগিতা করতেন।
উল্লেখ্য, চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করে রাখা সারবাহী জাহাজ থেকে ৫ জনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া আরও দুজনের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনা সাতজনের খুন হয়। তাদের সবার শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল। কারও কারও ছিল গলাকাটা।
খুন হওয়া ব্যক্তিরা হলেন- মাস্টার গোলাম কিবরিয়া, গ্রিজার সজিবুল ইসলাম, লস্কর মাজেদুল ইসলাম, শেখ সবুজ, আমিনুর মুন্সী, ইঞ্জিন চালক সালাউদ্দিন ও বাবুর্চি রানা কাজী। এ ছাড়া আহত ব্যক্তি হলেন- সুকানি জুয়েল।