১৯ দিন পর কুমিল্লার বাড়িতে সেই আকিব
আমোদ প্রতিনিধি
চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হওয়া শিক্ষার্থী মো.মাহাদী আকিব ১৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর কুমিল্লায় তার মায়ের কোলে ফিরেছে। এতোদিন চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকালে একটি অ্যাম্বুলেন্সে যোগে কুমিল্লা নগরীর বাদুরতলা এলাকার বাসায় তাকে নিয়ে আসা হয়। আকিবের বাবা কুমিল্লা জিলা স্কুলের শিক্ষক গোলাম ফারুক মজুমদার তাকে নিয়ে আসেন। আসার পর আকিব সবাইকে চিনতে পরেছেন, সব কিছু খেতেও পারছেন।
আকিবদের গ্রামের বাড়ি জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার কিং বামিশায়। কুমিল্লা জিলা স্কুলের তুখোড় ছাত্র ছিলো আকিব। ২০১৭ সালে জিলা স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে তিনি ভর্তি হন ঢাকার নটরডেম কলেজে। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর পরীক্ষা দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজে। দু’টোতেই উত্তীর্ণ হন সফলতার সঙ্গে। এরপর নিজের ইচ্ছায় ভর্তি হন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে । আকিবরা দুই ভাই-ই মেধাবী। তার বড় ভাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে আকিবদের বাসায় কথা হয় তার বাবা গোলাম ফারুক মজুমদার সঙ্গে। এ সময় তিনি বলেন, আকিব এখন ভালো আছে। সে সবাইকে চিনতে পেরেছে। প্রায় সব ধরণের খাবার খেতে পারছে। আমি দেশের মানুষের কাছে তার জন্য দোয়া চাই।
চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মেডিকেল বোর্ড আকিবকে এখন মোটামুটি সুস্থ বলছে। বাসায় থেকে এখন তার বাকি চিকিৎসা নেওয়া হবে চিকিৎসকদের পরামর্শে।
গোলাম ফারুক মজুমদার বলেন, আমি কখনোই এ ঘটনায় বিচার চাইনি। মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ যেটা ভালো মনে করবেন, সেটাই করবে। আমি চাই না এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কলেজ বন্ধ থাকুক, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি হোক। আমার ছেলে কখনোই রাজনীতি করতো না, এখনও করে না। ছাত্রলীগের দুই পক্ষের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে সে হয়েছে ‘বলির পাঁঠা’।
আকিবের মা নার্গিস আক্তার বলেন, আমার ছেলেকে কাছে পেয়েছি, এরচেয়ে বড় আনন্দ আমার কাছে আর কিছু নেই। আমি তার জন্য সবার কাছে দোয়া চাই, সে যেন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে আবারও পড়াশোনা শুরু করতে পারে।
উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের সংঘর্ষে গুরুতর আহত হয় মাহাদী আকিব। এরপর থেকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হাসপাতালের বেডে থাকা আকিবের মাথার পেছনের অংশে সাদা ব্যান্ডেজের একটি ছবি ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে লেখা ছিলো- ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না।’ ছবিটি মানুষের হৃদয়ে দাগ কেটেছে।