এমপি ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে দেবিদ্বারের পাঁচ মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ

প্রতিনিধি।।
কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শামীম, দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর ও কুমিল্লা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে হুমকি, হয়রানি, নির্বাচনী প্রচারণায় বাধার অভিযোগ এনে পাঁচ স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দেন তাঁরা। অভিযোগকারী পাঁচ মেয়র প্রার্থীরা হলেন-এমএ কাইয়ুম ভূঁইয়া (ক্যারামবোর্ড), মো. আবুল কাশেম (নারকেলগাছ), শাহজাহান মোল্লা (ইস্ত্রি), এবিএম আতিকুর রহমান বাশার (মোবাইল ফোন) ও শরিফুল ইসলাম সুমন (চামচ)।
ওই লিখিত অভিযোগে তাঁরা বলেন, দেবিদ্বার থানার ওসি ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে। তাঁরা রাতের আঁধারে অভিযানের নামে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছাড়াচ্ছে। আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে। তারা যাতে নির্বাচনী কাজ না করতে বাধা দিচ্ছেন। এটা তো নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং হতে পারে না। তাদের এমন ভূমিকায় অব্যাহত থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন পরিবেশ ব্যাহত হবে। এদিকে বিকালে স্থানীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এমএ কাইয়ুম ভূঁইয়া। সংবাদ সম্মেলনেও তিনি লিখিত বক্তব্য দেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘন করে অন্তত ৫০টির বেশি নির্বাচনী কার্যালয় বানিয়েছেন। তিনি নির্বাচনী এলাকার বাইরে থেকে বহিরাগত সন্ত্রাস দিয়ে আমাদের নির্বাচনী প্রচারণায় বাধা ও হামলা করছে। বারেরায় নির্বাচনী গণসংযোগ করতে গেলে নৌকার প্রার্থীর বহিরাগত কর্মী-সমর্থকরা আমাকে হত্যার চেষ্টা করেন। আমার প্রাণ বাঁচাতে আমাকে একটি ঘরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়, না হলে তারা আমাকে মেরে ফেলত। এসময় আমার তিন কর্মীকে বেধরক পিটিয়ে আহত করে। গত মঙ্গলবার রাতেও আমার দুই কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। তাঁরা প্রতিদিন আমাদের নির্বাচনী প্রচারে বাধা দিচ্ছে। স্থানীয় এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুল তাঁর বনকুট বাড়িতে আমার কর্মীদের ডেকে নিয়ে আমার পক্ষে কাজ না করতে চাপ প্রয়োগ করেন। এটি সুস্পষ্ট নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন।
নৌকার প্রার্থী সাইফুল ইসলাম শামীম বলেন, কারা কখন হামলা করেছে আমার জানা নেই। আমার কোন কর্মী সমর্থক হামলার সাথে জড়িত নয়।
কুমিল্লা-৪ আসনে সংসদ সদস্য রাজী মো. ফখরুল বলেন, এ ধরনের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি নির্বাচনের বিষয়ে কোনো রকম হস্তক্ষেপ করিনি। একটি পক্ষ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।
কুমিল্লা জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, সংসদ সদস্য তার বাড়িতে আসতেই পারেন। তবে নির্বাচনে তিনি প্রভাব বিস্তার করছেন এমন তথ্য আমাদের কাছে নেই। এ প্রার্থী যতগুলো অভিযোগ আমাদের কাছে করেছেন সবগুলো বিষয়েই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, আগামী ১৭ জুলাই কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনে ৮জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দেবিদ্বার পৌরসভা প্রতিষ্ঠার ২১বছর পর এটি প্রথম নির্বাচন।