উপ-নির্বাচন : এবার জিয়াউল হক মৃধাও সরে দাঁড়ালেন

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ে নাটকীয়তা কেবল বাড়ছেই। বিএনপির পদত্যাগী-বহিস্কৃত নেতা সাবেক একাধিকবারের সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভুইয়ার প্রার্থী হওয়া দিয়ে নাটকীয়তা শুরু হয়। এরপর জাতীয় পার্টির প্রার্থী বদল, আওয়ামী লীগপন্থী তিন প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দের পরদিন প্রতীক পরিবর্তন ইত্যাদি নাটকীয়তা ছাপিয়ে এবার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জাতীয় পার্টির সাবেক এম.পি স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াল হক মৃধা। বুধবার জিয়াউল মৃধার ছেলে প্রদীপ মৃধা বিষয়টি জানিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা এর আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর একটি চিঠি (নিজে স্বাক্ষরিত) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে উল্লেখ করা হয়, আসন্ন উপ-নির্বাচন পরবর্তী সংসদীয় মেয়াদকাল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। এই স্বল্প সময়ের মধ্যে জনগণকে দেয়া আশ্বাস ও কাঙ্খিত ওয়াদা পূরণ করা অত্যন্ত দুরূহ। জনগণ-ভোটারের কাছে উন্নয়নের মিথ্যা আশ্বাস দেয়া প্রতারণা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটরদের ম্যাণ্ডেট নিয়ে জয়ী হয়ে উন্নয়নের পরিকল্পনা, আশ্বাস এবং অসমাপ্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন বলে উল্লেখ করেন। চিঠিতে তিনি তার নেতাকর্মী, শুভাকাঙ্খীসহ সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে জানতে অ্যাভোকেট জিয়াল হক মৃধাকে তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে (০১৭১১-১১৩২৬৩) একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।জিয়াউল হক মৃধার ছেলে প্রদীপ মৃধা জানান, তার পিতার স্বাক্ষরিত চিঠিতেই নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কারণ উল্লেখ রয়েছে। এদিকে দলীয় চাপে তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্যস্ত আছি, এসব বিষয়ে কথা বলতে চাইনা। জেলা জাতীয় পার্টির সাবেক আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভাকেট জিয়াউল হক মৃধা এর আগে এই আসন থেকে দুই বারের সংসদ সদস্য ছিলেন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি আসন্ন (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপ-নির্বাচনে তিনি আপেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করার কথা ছিলো। তিনি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোয় এ আসনে বিএনপির পদত্যাগী-বহিস্কৃত নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়া (স্বতন্ত্র প্রার্থী), আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ (স্বতন্ত্র) ও জাতীয় পার্টি মনোনীত অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ভাসানী প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রয়েছেন।
উল্লেখ, গত ১১ ডিসেম্বর বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়া। এতে আসনটি শূন্য হওয়ায় উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এই আসনে অনুষ্ঠিত হবে ভোট গ্রহণ। তফসিল ঘোষণার পরই নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন সাবেক একাধিকবারের সাংসদ ও প্রতিমন্ত্রী বিএনপির পদত্যাগী-বহিস্কৃত বর্ষীয়ান নেতা উকিল আবদুস সাত্তার ভুইয়া। এর মধ্য দিয়েই নাটকীয়তা শুরু হয়। এরপর জাতীয় পার্টির প্রার্থী পরিবর্তন, আওয়ামী লীগপন্থী তিন প্রার্থীর মনোনয়ন প্রত্যাহার, প্রতীক বরাদ্দের পরদিন উকিল আবদুস সাত্তার ভুইয়া ও অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধার প্রতীক পরিবর্তনসহ নানাবিধ নাটকীয়তার পর এবার প্রায় চূড়ান্ত মুহূর্তে এসে নির্বাচন থেকেই সরে দাঁড়ালেন স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা।