ঋণের নামে কৃষকের টাকা আত্মসাৎ কৃষি কর্মকর্তার

প্রতিনিধি।
কুমিল্লার চান্দিনায় ব্যাংক থেকে কৃষি ঋণ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কৃষকদের কাছ থেকে অবৈধ ভাবে তিন লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছে এক উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা। একজন কৃষক ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে হলে তাকে ৫ হাজার টাকা এবং ২ লাখ টাকা ঋণ নিতে হলে তাকে ১০ হাজার টাকা জামানত দিতে হবে এমন কথা প্রচার করে প্রায় ৪০জন কৃষকদের কাছ থেকে তিন লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয় বদিউল আলম নামের ওই কৃষি কর্মকর্তা। চান্দিনা উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত উপ-সহকারী কৃষি কর্মর্কা বদিউল আলম বাতাঘাসী ইউনিয়নের মোহনপুর ব্লকে কর্মরত।
ভুক্তভোগী ইয়াকুব আলী মাস্টার, পল্লী চিকিৎসক আমিন উদ্দিন, কৃষক মনু মিয়া, চৌকিদার রহমত আলীসহ আরও অনেকেই জানান- বদিউল আলম ব্যাংক থেকে স্বল্প মুনাফায় ঋণ দিবে বলে ইউনিয়নের সাতগাঁও, তীরচর, বাতাঘাসী গ্রামের প্রায় ৪০ জনের কাছ থেকে কাগজপত্র, ছবি ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপিসহ ঋণ দেওয়ার কথা বলে জামানত বাবদ প্রতিজন থেকে ৫-১০ হাজার করে টাকা নেয়। এক সপ্তাহের কথা বলে ছয় মাস অতিবাহিত হলেও ঋণ দেওয়ার কোন খবর নেই। ঋণের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে নানান বাহানা ও হুমকি-ধমকি দেয় ওই কৃষি কর্মকর্তা। বেশ কিছু দিন হল তার কোন হদিস পাচ্ছিনা।
অভিযোগ সম্পর্কে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বদিউল আলম মুঠোফোনে জানান, আমার ব্লকের কাছের মানুষ যারা তাদেরকে কৃষি লোন দেব বলে জনপ্রতি ৫ হাজার করে জামাতের টাকা নিয়েছিলাম। ব্যাংকিং ঝামেলা হওয়ায় তাদেরকে ঋণ দিতে পারিনি। কয়েজনের টাকা ফেরত দিয়েছি। বাকিদের টাকা ফেরত দিব। কোন ব্যাংক থেকে ঋণ দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বা এ কৃষকদের ঋণ দেয়ার ব্যাপারে কোন চিঠি আছে কিনা জানতে চাইলে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
কর্মস্থলে অনুপস্থিতির প্রশ্নে তিনি বলেন- এ ঘটনায় লোকজন উত্তেজিত হয়ে আছে। তাছাড়া নিজের ব্যক্তিগত কিছু কারণে দুই-আড়াই মাস কর্মস্থলে যাওয়া হচ্ছে না।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, বদিউল আলম নিয়মিত কর্ম এলাকায় যান না। কৃষকদের খোঁজ রাখেন না। সে কয়েকজন কৃষকের নিকট থেকে অনৈতিকভাবে টাকা নিয়েছে। এসব বিষয়ে লিখিতভাবে নোটিশ করা হলেও নোটিশের জবাব না দিয়ে গত ২ মাস ধরে সে নিখোঁজ রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট লিখিতভাবে জানানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক আইউব মাহমুদ বলেন, ঋণ দেয়ার কথা বলে টাকা নেয়ার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে আমরা জিরো টলারেন্স। এবিষয়ে কোন ছাড় দেয়া হবে না।