`বিএনপির ঘাড়ে চড়ে তারা ব্যবসা বাণিজ্য করতে আসবে’
আখাউড়ায় বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মুশফিকুর রহমান
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
যেই আওয়ামী লীগ এতোদিন বিএনপিকে মেরেছে, যাদের জন্য নেতা-কর্মীদের চাকরি হয়নি-কাজ পায়নি; তারাই এখন আমাদের আপন হতে চাইবে। আমাদের (বিএনপি) ঘাড়ে চড়ে ব্যবসা বাণিজ্য করতে আসবে। তাদের ব্যাপারে সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। বহু কষ্টের পরে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি, তা যেন নস্যাত না হয়; সেদিকে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ, শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা, বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক, সাবেক সচিব, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক এম.পি মুশফিকুর রহমান এসব কথা বলেন। উপজেলা সদরস্থ আখাউড়া শহীদ স্মৃতি সরকারি কলেজ মাঠে উপজেলা বিএনপির আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক এই ডাকসাইটে আমলা মুশফিকুর রহমান আরও বলেন, গত ১৫ বছর বিএনপির নেতা-কর্মীরা অনেক কষ্ট করেছে। কথা বলার সুযোগ ছিলোনা, আমরা কথা বলতে পারতাম না। ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আমাদের কথা বলার স্বাধীনতা এনে দিয়েছে, আজ আমরা স্বাধীন। গত ১৫ বছর বিএনপির বহু নেতাকর্মী আওয়ামী লীগের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, মৃত্যুবরণও করেছেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে যারা শহীদ হয়েছে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। সভায় উপস্থিত হাজারো জনতার উদ্দেশ্যে মুশফিকুর রহমান বলেন, গত ১৫ বছর আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কিভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করেছে তা আপনারা দেখেছেন। স্বৈরাচারী সরকার উনাকে তিলে তিলে মেরে ফেলতে চেয়েছিলো। চিকিৎসার্থে বিদেশে যেতেও দেয়নি। আল্লাহর রহমতে জনগণের ভালোবাসায় তিনি বেঁচে আছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘদিন ধরেই বিদেশে, দেশে আসতে পারছেন না। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অত্যাচারী সরকারের পতন ঘটেছে, সরকার প্রধান শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে; দেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা এসেছে। এখন আমাদেরকে ঐকবদ্ধ হয়ে দেশ গড়তে হবে, দেশের জন্য কাজ করতে হবে। বিএনপি হচ্ছে কাজের প্লাটফরম। এজন্যই বিএনপিকে শক্তিশালী করতে হবে। বহুদিন পর নিজের নির্বাচনী এলাকায় আসতে পেরে আনন্দিত মন্তব্য করে তিনি বলেন, কসবা-আখাউড়া ছাড়া আমার আর কোথায়ও যাওয়ার জায়গা নাই। অন্য কোথাও যাবার ইচ্ছাও নাই।
আখাউড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি বিল্লাল খন্দকারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, উপজেলা বিএনপির সাবেক প্রধান উপদেষ্টা সৈয়দ শাহ আমানুল্লাহ্, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর মিশন, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন লিটন প্রমুখ। সভা শেষে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া দেড়শ’ পরিবারের মাঝে একটি তোষক ও দুইটি করে বালিশ উপহার দেওয়া হয়। এর আগে সকাল ১১ টায় ঢাকা থেকে আন্ত:নগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনে ঢাকা থেকে আখাউড়া রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনে এসে পৌঁছান সাবেক এম.পি মুশফিকুর রহমান। এসময় রেলস্টেশনে বিপুল সংখ্যক নেতা কর্মী উপস্থিত হয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানান।