ভাষা আন্দোলনে কুমিল্লার সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট

 

।। মোতাহার হোসেন মাহবুব।।

মানুষের ব্যক্তিক, পারিবারিক, সামাজিক, রাষ্ট্রিক এবং সর্বোপরি মানসিক জীবনের একটি আবশ্যিক ও জরুরী বিষয় হলো সংস্কৃতি। একে এড়িয়ে যাওয়া আর সংকট সমস্যাকে জিইয়ে রাখা প্রায় একার্থক। সংস্কৃতি হচ্ছে ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক। আর একে প্রকাশের সর্বোত্তম মাধ্যম হলো ভাষা। কাজেই ভাষা ও সংস্কৃতি একে অপরের পরিপূরক।
পাকিস্তানি দুঃশাসনের বিরুদ্ধে পূর্ববঙ্গে ভাষা আন্দোলন ছাত্র-জনতার অংশগ্রহণে প্রথম ব্যাপক গণতান্ত্রিক আন্দোলন। এ-আন্দোলনের প্রাথমিক লক্ষ্য যদিও পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুর পাশাপাশি বাংলাকে প্রতিষ্ঠা করা তবু এর সাংস্কৃতিক তৎপর্য বহুমাত্রিক। বলার অপেক্ষা রাখেনা, ভাষা আন্দোলন শুধু রাজনৈতিক আন্দোলনই ছিল না- এর সাথে বাঙালিদের সংস্কৃতি ও অন্যান্য বিষয়াদি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। কুমিল্লাকে অনেক আগে থেকে শিক্ষা ও সংস্কৃতির পাদপীঠ বলা হয়। ভাষা আন্দোলনের ক্ষেত্রে সাহিত্য-সংষ্কৃতি চর্চার প্রভাব ছিল সর্বাধিক। এ-প্রভাব পূর্ববঙ্গীয় সাহিত্য চর্চাকে পাকিস্তানি শোষণ- নিপীড়ন, সংকীর্ণতা ও রক্ষণশীলতা থেকে মুক্তি দিয়েছে। শুরু হয়েছে নতুন ধারার সেক্যুলার ও প্রতিবাদী সাহিত্য-সংস্কৃতি সৃষ্টির চর্চা। এর প্রমাণ মিলে ১৯৫২ সালেরই আগস্ট মাসে কুমিল্লা শহরে অনুষ্ঠিত সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলনে। এ- সম্মেলনের বহুমাত্রিক অনুষ্ঠানে প্রগতি ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিশেষ প্রকাশ দেখা যায়। যেমন দেখা যায় সঙ্গীতে, মঞ্চ নাটকে, আলোচনায়, এমনকি লোকসঙ্গীত প্রকাশে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রকাশ পেয়েছিল ১৯৫৪ সালে ঢাকার কার্জন হলে অনুষ্ঠিত আবেগদীপ্ত, সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্মেলনে এবং ১৯৫৭ সালে কাগমারিতে মওলানা ভাসানীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত সাহিত্য-সংস্কৃতি সম্মেলনে। এ-কথা অস্বীকার করার জো নেইÑ পূর্ববঙ্গকে স্বাধীন করার দাবিটি বামপন্থীরাই প্রথম এ-সম্মেলনে তুলেছিল। মওলানা ভাসানী তো এ-সম্মেলনে স্পষ্ট করে বলেই দিয়েছেন। কাগমারি সম্মেলনের আগে ১৯৫৫ সালের ১৮, ১৯ ও ২০ অক্টোবর পূর্ব পাকিস্তান আন্তঃকলেজ সাংস্কৃতিক সম্মেলন কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হয়। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ ড. আখতার হামিদ খানের নেতৃত্বে ছাত্র সংসদ এ সম্মেলনের আয়োজন করে। ওই সময়ে ড. আখতার হামিদ খান পূর্ব পাকিস্তান কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ওই সময় গণতান্ত্রিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন করার প্রস্তাবও পেশ করেন। অধ্যক্ষ থাকাকালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন। কুমিল্লার মাটি ও মানুষের টানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সলরের পদ গ্রহণ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। যে কথা বলছিলাম, পূর্ব পাকিস্তান আন্তঃকলেজ সাংস্কৃতির সম্মেলনের প্রথম দিনের কর্মসূচির মধ্যে ছিল সম্মেলনে আগত অতিথিদের ভাষণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, গণসঙ্গীত, লোকগীতি ও আধুনিক গানের আসর। গণসঙ্গীত ও রবীন্দ্রসঙ্গীত পরিবেশন করেন সুখেন্দু চক্রবর্তী ও পরিমল দত্ত। ঈশ্বর পাঠশালায় ব্রতচারী নৃত্যানুষ্ঠান উদ্বোধন করে অধ্যাপক বদরুল হাসান। সাহিত্যানুষ্ঠানে অধ্যাপক কবীর চৌধুরী সুচিন্তিত প্রবন্ধ পাঠ করেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সুচরিত চৌধুরী রচিত ও পরিচালিত ‘পার্কের কোণে’ নাটক মঞ্চস্থ হয়। মুনীর চৌধুরী অভিনীত ‘অরুণোদয়ের পথে’ নাটকটি প্রশংসীত হয়। গীতিনাট্যে প্রথম হয়েছিল সুখেন্দু চক্রবর্তীর দল।

দুই
উপমহাদেশের ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির মহান ঐতিহ্যে কুমিল্লার রয়েছে গৌরবোজ্জল ভূমিকা। জানা যায়, ভারতবর্ষের প্রাচীনতম রাজ্য ত্রিপুরার সরকারি ভাষা ‘বাংলা’ ও ‘ককবরক’। অধিকাংশ তাম্রশাসন বাঙ্গালা ভাষা ও বাঙ্গলা অক্ষরে লিখা হতো। ১৮৭৬ সালে মোহনী মোহন বর্ধনের উদ্যোগে কুমিল্লার আদালতে বাংলা ভাষায় সওয়াল জবাব শুরু হয়। এর আগে ফার্সী ভাষায় সওয়াল জবাব হতো। মোহনী মোহন বর্ধন ১৮৮৭ সালে ত্রিপুরা রাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তরুণ লেখক আহসানুল কবীর বলেছেন, ‘১৮৬৭ সনে কুমিল্লা জেলার প্রথম গ্রাজুয়েট ও ত্রিপুরার সাবেক প্রধানমন্ত্রী রায় বাহাদুর মোহনী মোহন বর্ধনের উদ্যোগে কুমিল্লা জজকোর্টে প্রথম বাংলা ভাষায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল’। (কুমিল্লার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি, পৃ. ২৫৮), আসলে কুমিল্লায় উপনেবেশিক কাল থেকে হিন্দু-মুসলিম অপূর্ব সমন্বয়ে ব্যাপকভাবে সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা হয়েছে। প্রতিটি পাড়া মহল্লায় সন্ধ্যার পরপরই সঙ্গীত চর্চার বিষয়টি উপলব্ধি করা যেত। এরই ধারাবাহিতায় কুমিল্লার সাংস্কৃতিক জগৎ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তিতে গঠিত পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর কুমিল্লার সংস্কৃতি চর্চায় স্বাভাবিক গতি ও চাঞ্চল্য হারাতে বসে।
১৯৪৭-১৯৫২ সময়কালে কুমিল্লায় ডিএসএফ গঠন, পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের জেলা সংসদ প্রতিষ্ঠা এবং প্রগতি মজলিস সংস্কৃতি চর্চার মন্থর গতিকে প্রগতিশীল ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার আলোকে সংস্কৃতি সাধনার মাধ্যমে গতিশীল করে তোলে। ১৯৫২ সালের গোড়ার দিকে প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক কর্মীরা ‘প্রগতিশীল মজলিস’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করে। এর সভাপতি ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইংরেজি সাহিত্যের অধ্যাপক অজিত নাথ নন্দী, সহ সভাপতি ছিলেন আসহাব উদ্দিন আহমদ ও আবুল খায়ের আহমদ, সম্পাদক ছিলেন নুুরুন্নবী। এ-সংগঠন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি চর্চায় কুমিল্লায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। এরই আলোকে কুমিল্লায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, জয়ন্তী উদযাপন, ঋতু উৎসবের মাধ্যমে প্রগতিশীল সংস্কৃতি চর্চার একটি বলয় সৃষ্টি হয়। ভাষা আন্দোলনের পটভূমি তৈরির মাধ্যমে প্রগতি মজলিস সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়। বস্তত পক্ষে ডিএসএফ, পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগ ও প্রগতি মজলিস এ তিনটি সংগঠন ছিল চিন্তা ও আদর্শে অভিন্ন। বক্তৃতা, আবৃত্তি, সঙ্গীত, নাটক, চিত্রাঙ্কন, রবীন্দ্র-নজরুল-সুকান্ত জয়ন্তী উদযাপন, দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ ইত্যাদির মাধ্যমে এ-সংগঠনগুলো সাংস্কৃতিক জাগরণে অনন্যসাধারণ ভূমিকা পালন করে। এর বাইরেও কুমিল্লায় সংস্কৃতি চর্চা হয়েছে। শচীন দেব বর্মন, অজিত চৌধুরী, কুলেন্দু দাস, সুখেন্দু চক্রবর্তী, বেহালা বাদক অবণী বাবু, বংশীবাদক ব্রজেন দে, তবলচি সান্ডু সহ বেশ কয়েকজন গড়ে তোলেন ‘বাণী বিতান’ সঙ্গীত সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এ-সংগঠনের উদ্দেশ্য ছিল সাংস্কৃতিক চেতনা সৃষ্টির মাধ্যমে রাজনৈতিক অগ্রসরতার ক্ষেত্র তৈরি করা। সুধীন দাস পরিচালনা করতেন ‘সুর মন্দির’। এ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিক্ষালাভ করলো তা প্রদর্শনের জন্য প্রতিমাসে সঙ্গীত শিক্ষার্থী সম্মেলন হতো। রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী পালন করতো অমূল্য স্মৃতি পাঠাগার ও বসন্ত স্মৃতি পাঠাগার। ছাত্র ফেডারেশন সুকান্ত স্মৃতি পাঠাগারের মাধ্যমে গণসঙ্গীত চর্চা করতো।

তিন.
কুমিল্লায় ১৯৫২-র ২২,২৩ ও ২৪ আগস্ট পূর্ব পাকিস্তান সাংস্কৃতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ-সম্মেলন উদ্বোধন করেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যক্ষ ড. আখতার হামিদ খান। তিনি এ-সম্মেলন সফল করার ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকাও পালন করেন। এছাড়া এ-সম্মেলনকে সফল ও সার্থক করার লক্ষ্যে একটি অভ্যর্থনা কমিটি গঠন করা হয়। অধ্যাপক অজিত নাথ নন্দী, অধ্যাপক আবুল খায়ের ও অধ্যাপক আশুতোষ চক্রবর্তী যথাক্রমে এ-কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ মনোনীত হন। অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন ও ছাত্রকর্মী জালাল উদ্দিন প্রাণপণ পরিশ্রম করেন। কুমিল্লার সব সাংস্কৃতিক সংগঠনের কর্মসুচিকে সমন্বয় করার দায়িত্ব দেয়া হয় সালাউদ্দিনকে। সম্মেলনে বরুড়ার কমরেড এয়াকুবের কর্মীগণ উজ্জ্বল ভূমিকা রাখেন। অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন চট্টগ্রামের লোক, সে-কারণে সেখানকার সাংস্কৃতিক দলসমূহ এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের সাথে যোগাযোগ করা এবং তাদের সম্মেলনে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করার বিশেষ দায়িত্ব তাকে বহন করতে হয়। তিনি এ-দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করেছিলেন। অধ্যাপক আবুল খায়ের আহমদ কেন্দ্রের মাধ্যমে সারাদেশের সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সাথে যোগাযোগ করে তাদের সম্মেলনে অংশগ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের অধ্যাপক ও স্কুল শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করেন। তাকে সহযোগিতা করেন অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন। সম্মেলনের মূল সভাপতি করা হয়েছিল আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদকে। বায়োবৃদ্ধ ও শারীরিকভাবে অনেকটা অক্ষম আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদকে অধ্যাপক আসহাব উদ্দিন নিজে তার বাসায় নিয়ে গিয়েছিলেন এবং সপ্তাহ খানেক বাসায় রেখেছিলেন।
প্রগতি মজলিসের উদ্যোগে এ-সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও কুমিল্লার বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও এ-সম্মেলন সফল করতে আন্তরিকভাবে এগিয়ে আসে।
সম্মেলন সম্পর্কে মুস্তাফা নূর উল ইসলামের বিষ্ময়ানুভূতি:
কুমিল্লাতে নেমে দেখি, সে কি বিশাল আয়োজন। সামান্যতম ক্রটিহীন সংগঠনিক প্রস্তুতি। অবিশ্বাস বিষ্ময়েরই বটে। একটি মফস্বল শহর এমন সাধন করেছিলেন এরা কেমন করে। সম্মেলনের প্রতিদিনের অনুষ্ঠান দুটি পর্বে বিভক্ত ছিল। প্রথম পর্ব সকাল ও অপরাহ্নে দুটি সাহিত্যানুষ্ঠান হতো। এতে ছিল প্রবন্ধ পাঠ, কবিতা আবৃত্তি ও বক্তৃতা। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এ-সম্মেলন ঘিরে লিখতে গেলে অনায়াসে একটি পৃথক প্রবন্ধ লিখা যায়, ওদিকে যাবো না। শুধু এটুকু বলতে চাই, ‘পূর্ব পাকিস্তান সাংস্কৃতিক সম্মেলন-১৯৫২ কুমিল্লা’ সহ বেশ কিছু সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্মেলন কুমিল্লার সাংস্কৃতিক ভূমিকে উর্বর করে তোলে, যা সমকালে আলোড়ন সৃষ্টি করে। যার প্রভাব পড়ে ভাষা আন্দোলনের উপর এবং এ-আন্দোলনকে গতিশীল করতে কুমিল্লার ভাষাসংগ্রামীরা অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। এরই ফলশ্রুতিতে আমরা একজন ভাষাসংগ্রামী শহিদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলামকে কুমিল্লার গর্বিত সন্তান হিসেবে দেখতে পাই। কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত ১৯৫২-র সাংস্কৃতিক সম্মেলনকে গর্বের সাথে স্মরণ করি। একই সাথে বলতে চাই, দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা চালুর লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকল্প নেই। এ-আন্দোলন চাঙ্গা করতে কুমিল্লার সাংস্কৃতিক কর্মীরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন। এর পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদেরও সংস্কৃতিবান্ধব মনোভাব ধারণ করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত বাংলাদেশ গড়তে ভাষা আন্দোলনের অসাম্প্রদায়িক মানসিকতাকে লালন করা প্রয়োজন।
লেখক: কবি, সাংবাদিক ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক।