দেশ ঘুরেছেন,সাইকেলে করতে চান বিশ্বভ্রমণ
অফিস রিপোর্টার।
মাহমুদুল হাসান ইফাজ। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার গোমতী নদীর পাড়ের বানাশুয়া গ্রামে তার বাড়ি। ছোট বেলা থেকে নদীর মতোই সে দুরন্ত। সাইকেল নিয়ে পাগলামি শৈশব থেকে। মাদক বিরোধী ও সবুজ রক্ষার শ্লোগান নিয়ে সারা দেশ ঘুরেছেন। পাশের দেশ ভারতে সীমান্ত জেলাগুলোও ঘুরেছেন ইফাজ। তার স্বপ্ন সাইকেলে বিশ্ব ভ্রমণ করা।
মাহমুদুল হাসান ইফাজ জানান, ২০১৪ সাল। বয়স কম। নিয়ম কানুন তেমন জানতাম না। ভারতের কলকাতা থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম পর্যন্ত একটি সাইকেল র্যালি হবে। এমন তথ্য শুনে একটি নরমাল সাইকেল নিয়ে রওয়ানা করলাম। বাড়ি থেকে টানা দুই দিন সাইকেলে চড়ে বেনাপোল স্থলবন্দরে উপস্থিত হই। পাসপোর্ট ভিসা না থাকায় বন্দর দিয়ে ওপাড়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। লুকিয়ে ভিন্ন পথে পার হই। ফেরার সময় সাইকেল কাঁধে নিয়ে নদী পার হতে হয়। চরে ডাকাতের কবলে পড়ি। সে সময় কৌশলে রক্ষা পাই।
ইফাজ জানান, একদিনে তিনি টিম বিডিসির সাথে বিরতিহীন ৫০০ কিলোমিটার সাইকেল ভ্রমণ করেছেন। ঢাকা থেকে তার যাত্রা শুরু হয়। ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থেকে শেরপুর, কিশোরগঞ্জ পরে আবার ময়মনসিংহের ভালুকায় ফিরে আসেন। বাংলাদেশের সবকটি জেলাতেই ঘুরেছেন। তার সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি শতবর্ষী বৃক্ষ রক্ষা-ইয়ুথ এগিনেস্ট ড্রাগ এই দুইটা ম্যাসেজ পৌঁছে দেন। ২০১২ সালে যোগ দেন বিডি সাইক্লিস্ট গ্রুপের সাথে। পরে স্থানীয় কমিউনিটি সংগঠন কুমিল্লা সাইক্লিস্ট গ্রুপের এডমিনের দায়িত্ব পালন করছেন ।
চলতি বছর টানা ৪২ দিন সাইকেলে ভারতের ৫ টি রাজ্য ভ্রমণ করেছেন। যার মধ্যে ত্রিপুরা, মিজোরাম, আসাম, মেঘালয় এবং পশ্চিমবঙ্গ রয়েছে। সেখানে ভ্রমণের সময় সাধারণ মানুষের মন উজাড় করা ভালোবাসা পেয়েছেন। বিশেষ করে বাংলাদেশে যাদের আদি নিবাস ছিলো তারা লাল সবুজ পতাকা দেখে এগিয়ে গেছে। রাতে থাকার ব্যবস্থা করেছে। খাবার দিয়েছে। ৪২দিন ভ্রমণে তার মাত্র ১২হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
হার্ট কেয়ার ফাউন্ডেশন কুমিল্লা কাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ডা.তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ বলেন,হার্ট ভালো রাখতে শারিরীক পরিশ্রমের বিকল্প নেই। তার মধ্যে অন্যতম সাইক্লিং। ইফাজ তরুণদের পরিবেশবান্ধব বাহন চালনায় উৎসাহী করছে।
কুমিল্লা সাইক্লিস্ট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা এডমিন রায়হান সবুজ বলেন, সবুজ প্রকৃতি রক্ষায় আমরা সাইক্লিং শুরু করি। ব্যস্ততা বেড়ে যাওয়ায় এখন খুব বেশি সময় দিতে পারিনা। তবে ইফাজ এখনর সাইক্লিংকে ধ্যান জ্ঞান হিসেবে নিয়েছে।
মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক চৌধুরী ইমরুল হাসান বলেন,খেলাধুলা তরুণদের মাদক,ধূমপান,মোবাইল ফোন আসক্তি ও ইভটিজিং থেকে দূরে রাখে। সাইক্লিং খেলাধুলার মতোই তরুণদের খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে। কুমিল্লা সাইক্লিং গ্রুপের ইফাজসহ কিছু তরুণ সাইক্লিংয়ের মাধ্যমে মাদক নিয়ন্ত্রণসহ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করছে।