মণ্ডপের ঘটনায় ৯৯৯ কল করা ব্যক্তি অপ্রকৃস্থ

 

অফিস রিপোর্টার।।

কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে কোরআন রাখার বিষয়ে ৯৯৯-এ কল করেন ইকরাম হোসেন (৩০)। ইকরাম নগরীর কাশারিপট্টির রিকশাচালক বিল্লাল হোসেনের ছেলে। ইকরাম বিবাহিত। মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ ও মাদক সংশ্লিষ্ট হওয়ায় স্ত্রীর সাথে দূরত্ব রয়েছে। সে পাইপ মিস্ত্রির কাজ করে। মঙ্গলবার রাতে ইকরাম ছোট ভাইয়ের সাথে ঝগড়া করে বেরিয়ে যায়। সারারাত বাইরে থাকে সে। বুধবার সকালে নানুয়ার দিঘির পাড়ে গিয়ে ৯৯৯-এ কল করে ইকরাম। তারপর পুলিশ ঘটনাস্থলে হাজির হয়।
একটি সূত্রে জানা যায়, ইকরামকে পুলিশ ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তার রাজনৈতিক পরিচয় অস্পষ্ট।

তার মা সেলিনা আক্তার জানান, সে আবেগের বশবর্তী হয়ে পুলিশকে কল করেছে।

ফেসবুকে লাইভ করা ব্যক্তি মোবাইল ফোন ব্যবসায়ী:
এদিকে মণ্ডপ থেকে কোরআন শরিফ উদ্ধারের ভিডিও মোবাইলে ধারণ ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ফয়েজ আহমেদকে (৪০) গ্রেফতার করে কোতয়ালি থানা পুলিশ। তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে আইসিটি আইনে মামলা করে। ফয়েজ আহমেদ কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার রঘুরামপুর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে। তার দুই ছেলে দুই মেয়ে।
ফয়েজের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন জানান, ২০০০ সালে তাদের বিয়ে হয়। ২০০২ সালে ফয়েজ সৌদি যান। ২০২০ সালে সৌদি আরব থেকে দেশে আসেন ফয়েজ। পরে নগরীর কান্দিরপাড়স্থ খন্দকার হক মার্কেটে মোবাইল সেবা নামে একটি দোকান খুলে ব্যবসা শুরু করেন। বুধবার সকাল ৭ টার দিকে নানুয়ার দিঘির পাড় হাঁটতে বের হয় ফয়েজ। তখন পূজামণ্ডপের ঘটনাটি ভিডিও করে ফেসবুকে শেয়ার করেন।
এদিকে কুমিল্লায় মণ্ডপ ঘিরে উত্তেজনার ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচটি মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে চারটির বাদী পুলিশ, একটিতে র‌্যাব। দুটি মামলা বিশেষ ক্ষমতা আইনে করে পুলিশ, পুলিশের বাকি দুইটি মামলার একটি আইসিটি অপরটি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের। র‌্যাবের করা মামলাটি আইসিটি আইনে। সবকটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৪০জন। পুলিশ ও র‌্যাবের করা আইসিটি আইনের মামলায় আসামি একজন করে। তারা দুইজনই গ্রেফতার হয়েছেন। এছাড়া পুলিশের করা বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ৩৮জন। এই দুই মামলায় এজহারনামীয় আরও ২২ আসামি পলাতক রয়েছেন। দুই মামলার একটি ৪০০ ও আরেকটিতে ৫০০জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখছি কারও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আছে কি-না। তদন্তের স্বার্থে এবিষয়ে এখন কোনও মন্তব্য করতে চাই না।

উল্লেখ্য-বুধবার সকালে দুর্গাপূজার মণ্ডপে মূর্তির ওপর কোরআন শরিফ রাখার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ৯৯৯-এ কল করে পুলিশকে ঘটনাটি জানালে কোতোয়ালি থানার ওসি আন্ওয়ারুল আজিম কোরআন শরিফটি উদ্ধার করেন। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।