‘স্বল্প মেয়াদী সরিষা ও মাশকলাই চাষে কৃষক ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন’
অফিস রিপোর্টার।।
বন্যার কারণে অনেক জমি পানিবন্দি। সেখানে এখন রোপা আমন ধান লাগানো যাচ্ছে না। ২০সেপ্টেম্বরের পরে সেসব মাঠে রোপা আমন ধান না লাগানোর পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কারণ ফুল আসবে শীতের সময়। এতে ফসল নষ্ট হয়ে যাবে। এছাড়া বোরো চাষেও সমস্যার সৃষ্টি হবে। সে সব জমিতে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে স্বল্প মেয়াদী রবিশস্য যেমন শালশাক, পাটশাক, ধনিয়া, সরিষা, মাশকলাই চাষ করে কৃষক তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারেন। এদিকে বাংলাদেশ পরমাণু ইনস্টিটিউট কেন্দ্র (বিনা)’র কুমিল্লা উপ-কেন্দ্র কৃষি মন্ত্রণালয়ের পরামর্শে এই অঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে সরিষা ও মাশকলাইয়ের বীজ বিতরণের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এদিকে বিনা কুমিল্লা উপ-কেন্দ্রের বীজতলায় উৎপাদন করা ধানের চারা ১৫-২০সেপ্টেম্বরের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হবে। বিনা উদ্ভাবিতে উচ্চ ফলনশীল এবং স্বল্পমেয়াদী জনপ্রিয় জাত সমূহের পরিচিতি ও চাষাবাদ কলাকৌশল শীর্ষক দিনব্যাপী আঞ্চলিক প্রশিক্ষণে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ পরমাণু ইনস্টিটিউট কেন্দ্র (বিনা)’র কুমিল্লা উপ-কেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। বিনা কুমিল্লার উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ড. মো. আশিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিনার মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কুমিল্লা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ মো. আক্তারুজ্জামান, উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আইউব মাহমুদ, বিনা উপ-কেন্দ্র কুমিল্লার উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফাহমিনা ইয়াসমিন। প্রশিক্ষণে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে কৃষক, কৃষি কর্মকর্তা, সংগঠক ও গণমাধ্যমকর্মীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী অঙ্গনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। উন্মুক্ত আলোচনায় উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী ফসলের জনপ্রিয় জাত সমূহের পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এছাড়া বক্তারা বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লা অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ক্ষতি হয়েছে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষক। নষ্ট হয়েছে ৮৬ হাজার হেক্টর ফসল। বাড়ি-ঘর হারিয়ে অনেকেই নি:স্ব হয়ে গেছেন। তাই তাদের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ দিতে হবে। পুনর্বাসনের পাশাপাশি বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ করতে হবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে।
কৃষকের মনোবল বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করতে হবে। কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে কুমিল্লা অঞ্চলে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫৪ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে সার দেয়া হবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সহযোগিতায় ও বিনার গবেষণা কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্পের অর্থায়নে বিনা উদ্ভাবিত জাত এবং প্রযুক্তির চাষাবাদ, বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ কলাকৌশল শীর্ষক প্রশিক্ষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়।
সর্বশেষ বিনা’র কুমিল্লা উপ-কেন্দ্রের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফাহমিনা ইয়াসমিনের ময়মনসিংহে প্রধান কার্যালয়ে বদলি উপলক্ষে বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তারা বলেন,ড. ফাহমিনা ইয়াসমিন কৃষি অন্ত:প্রাণ মানুষ। তিনি বৃহত্তর কুমিল্লার কৃষির জন্য আন্তরকিভাবে কাজ করেছেন। আমরা তার সুন্দর আগামী প্রত্যাশা করি।