ভালো নেই কুমিল্লার ৮শতাধিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী

 

কুমিল্লা নগরী ও ১৭উপজেলার ৮শতাধিক স্বর্ণ ব্যবসায়ী ভালো নেই বলে তারা দাবি করেছেন। তাদের মতে, ২০১৮সালের পর থেকে ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। অনেকে দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। কেউ গোল্ড প্লেটের(সোনার মতো দেখতে গহনা) ব্যবসা করছেন। কেউ সোনা বন্ধকী ব্যবসা করছেন। সোনার দাম বেড়ে যাওয়া, করোনা, দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতির কারণে মানুষ সোনার গহনা ক্রয় কমিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া আধুনিক পরিবারের লোকজন গহনা কম ব্যবহার করছেন। এনিয়ে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক আমোদে সংবাদ প্রকাশিত হয়।

সংবাদে উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লায় স্বর্ণ ব্যবসার প্রায় ১০০ বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। তবে ৬০দশক পর্যন্ত নগরীর ছাতিপট্টি ও রাজগঞ্জ এলাকায় হাতে গোনা ৫/৬টি দোকান ছিলো। ৭০ দশকের পর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০টি। ৮০ দশকের পর এর সংখ্যা আরো বাড়ে। ৯০ দশক পর্যন্ত তারা ভালো ব্যবসা করেন। ৯০এর পর থেকে সোনা ব্যবসায় জোয়ার ভাটা শুরু হয়। তবে বেশি দোকান বেড়েছে ২০০০সালের পরে। নগরীতে বর্তমানে আড়াই শতাধিক দোকান রয়েছে। তাদের অনেকে দোকানের কর্মকার। কম পূঁজি নিয়ে নেমেছেন। ২০১৮সালের পর থেকে অনেকের অবস্থা ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। শতকরা ৪ভাগ ব্যবসায়ী ভালো আছেন। গত কয়েক বছরে নগরীর ১০-১২জন দোকান ছেড়ে দিয়েছেন। কেউ গোল্ড প্লেটের ব্যবসা করছেন। কেউ সোনা বন্ধকী ব্যবসা করছেন।
সালেহা আক্তার নামের একজন গৃহবধূ জানান, এখন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি। মধ্যবিত্ত শখ করে সোনা ক্রয় করতে পারেন না। বছর বছর নতুন গহনা কিনতে পারে না। আমরা পুরাতন গুলোকে ভেঙে নতুনের আকার দিয়ে দুধের স্বাদ ঘোলে মিটাই।
কমল সাহা নামের একজন ব্যবসায়ী জানান, সোনার দাম বাড়ার কারণে,করোনা মহামারি, দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতিতে মানুষ সোনার গহনা ক্রয় কমিয়ে দিয়েছেন। সবাই জীবন যাত্রার ব্যয় নির্বাহ নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া আধুনিক পরিবারের লোকজন গহনা কমিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, মধ্যবিত্ত নারীরা বেশি গহনা ব্যবহার করেন। বিয়ে ছাড়া এখন মানুষ সোনার গহনা তেমন ক্রয় করেন না। কিন্তু দাম বাড়ায় বিয়েতেও গহনা ব্যবহারের পরিমাণ কমে গেছে। যেখানে ৫ভরি ব্যবহার করতো, সেটা দুই ভরিতে এসে ঠেকেছে। নিম্নবিত্ত গোল্ড প্লেট দিয়ে চালিয়ে দিচ্ছে।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স এসোসিয়েশন কুমিল্লা জেলার সভাপতি আজম খান জুয়েলারের স্বত্ত্বাধিকারী শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান বলেন,আমাদের প্রতিষ্ঠানের বয়স ৭০বছরের বেশি। তিনি নিজে ৪৫বছর ধরে ব্যবসা করছেন। ১৯৬৬সালে প্রতি ভরি সোনা ১২৮টাকা বিক্রি করতেন। এখন প্রতি ভরি সোনা ৮২হাজারের বেশি বিক্রি করেন। সোনা আমদানিতে ও খুচরা বিক্রিতে ট্যাক্স কমালে দাম কমবে। এতে মানুষ সোনা ক্রয়ে আগ্রহী হবে।

সংবাদ থেকে জানা যায়,সোনার দাম বাড়ার কারণে,করোনা মহামারি, দ্রব্যমূল্যে উর্ধ্বগতিতে মানুষ সোনার গহনা ক্রয় কমিয়ে দিয়েছেন। সবাই জীবন যাত্রার ব্যয় নির্বাহ নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া আধুনিক পরিবারের লোকজন গহনার ব্যবহার কমিয়ে দিয়েছেন। মূল কথা হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। আগে জীবন যাত্রার ব্যয় নির্বাহ তারপওে শখ পূরণ। ব্যবসায়ীদের মতে, সোনা আমদানিতে ও খুচরা বিক্রিতে ট্যাক্স কমালে দাম কমবে। এতে মানুষ সোনা ক্রয়ে আগ্রহী হবে। ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবে। আমরা মনে করি, সবক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ আসুক। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিম্নমুখী হোক। ব্যবসায়ী ক্রেতা সবাই স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন যাপন করুক।