আলোকিত মানুষ–ইয়াসমীন রীমা
তিনি চলে গেলেন। চির নিয়মে। শামসুননাহার রাব্বী। শামসুননাহার শাব্দিক অর্থ-‘দিনের সূর্য’ অর্থাৎ এমন আলোকিত মানুষ যিনি সবকিছুকে আলোকিত করেন। রেখে গেলেন নিজের সৃষ্ট সাহিত্যকর্ম। ১৯৫৭সালে ২০অক্টোবর সাপ্তাহিক আমোদ প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ফজলে রাব্বীর সহধর্মিনী হন তিনি। পত্রিকা ভাঁজ করা, পোষ্টাল টিকেট লাগানো, প্রিন্টেট ঠিকানা সংযোগ করা, বানান দেখা ইত্যাদি কাজ করতেন তিনি। তাঁর জীবনের লেখা প্রথমটি প্রতিবেদনটি ছাপা হয় সম্পাদক ফজলে রাব্বী সম্পাদনায় হাত গলিয়ে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় যার শিরোনাম ছিলো “সিনেমা হলে চা চক্র”।
১৯৬৫-৬৭সাল পর্যন্ত মাসিক “ময়নামতি” নামে সাহিত্যপত্র সম্পাদনা ও ’৬০বছরের বেশি সময় ধরে সব মিলিয়ে শামসুননাহার রাব্বী নিরবিচ্ছিন্নভাবে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭৯ সালে হজ পালন করেছেন। দেশে ফিরে ঘটমান জীবনবোধেকে তাঁর নিজস্ব জীবনোপলব্দি ও কল্পনা প্রতিভার সম্বন্বয়ে আমাদের জন্য স্মৃতিমূলক গ্রন্থ “মহামিলনের মহামেলায়”সহ গল্পগন্থ ব্যবধান, ভ্রমণ কাহিনী “ প্রচ্য থেকে প্রতীচ্য” ও তাঁর পাঁচ দশকের বিভিন্ন লেখা নিয়ে গ্রন্থ “ভালোবাসার পাঁচ দশক” লিখেছেন।
বিদায় শব্দটির ভেতরে হারিয়ে যাওয়ার দ্যোতনা রয়েছে। হতে পারে “বিদায়” ক্ষণিক কিংবা দীর্ঘ সময়ের জন্য; তারপরও কান্নাহাসির দোল দোলানো বিদায়কে আমাদের মেনে নিতে হয়। মানুষ চলে যায়, একইভাবে বিদায় নেয় সময়ও। বিদায় বেলার আবেগ মনের গহীনে সযতনে রেখে আমরা প্রিয়স্মৃতি কথা ভাবি। কান্নাচাপা হাসিতে বিদায় বেদনা আমরা লুকিয়ে রাখি মনের মুুকুরে। আমার সব অনুভূতির প্রকাশের পথ একমাত্র কলম। মানুষটির দৈহিক মৃত্যু ঘটেছে তাঁর সৃজনশীল সাহিত্যকর্ম সবটাই জীবিত থাকবে। তাই ফিরে আসি রবীন্দ্রনাথে “তোমায় আমি হারাই যদি,তুমি হারাও না যে”!
লেখক:কুমিল্লা প্রতিনিধি,নিউএইজ।