কুমিল্লায় ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেল ১৫০ জন

 

inside post

ইলেক্ট্রশিয়ান মোঃ সাজু। নুন আনতে পানতা ফুরায়। তার দুই ছেলে ১ মেয়ে। তার বড় মেয়ে এসএসি পাশ করা সানজিদা নিজের আগ্রহে পুলিশ নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়। পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার আগে অনেকেই জানতে চায় লোক আছে নি? না হয় চাকরি হবে না। এমন কথা শুনে তবুও এগিয়ে যায়। ৯ এপ্রিল চূড়ান্ত যাছাই বাছাই ও পরীক্ষা শেষে সাজু বাংলাদেশ পুলিশের কন্সটেবল পদে চাকরি হয়। অনুভূতি জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।
২০১৩ সালে যখন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সময় হয় তার আগে হঠাৎ করে বাবা মারা যায় মানিক মিয়ার। ৪ ভাই এর মধ্যে তৃতীয় মানিক। বড় ভাই একটি গামেন্টসে চাকরি করেন। মানিকের লেখাপড়ার ও সংসারের খরচ বহন করতে কঠিন হয়ে হয়ে পড়ে। মানিক এখন বাংলাদেশ পুলিশের কন্সটেবল পদে উত্তীর্ণ হয়েছে। মানিকের স্বপ্ন পরিবারের হাল ধরা।
রোববার বিকেলে কুমিল্লা পুলিশ লাইনসের শহীদ আর আই এবিএম আবদুল হালিম মিলনায়তনে ১৫০ জন কনস্টেবল পদে উত্তীর্ণ হওয়ায় প্রার্থীরা আসেন। তাদের সবার জীবনের গল্পগুলো প্রায় একই রকম।
রোবার বিকালে সদ্য নিয়োগ পাওয়া পুলিশ সদস্যদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( প্রশাসন ও অর্থ) কাজী আবদুর রহীম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) এম.তানভীর আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সোহান সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( ট্রাফিক প্রসিকিউশন এ্যান্ড ডিবি) রাজন কুমার দাশসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশ সুপার মোঃ ফারুক আহমেদ বলেন, আমার চাকরি জীবনের সবচেয়ে সৌভাগ্যের ঘটনা। দুই ধাপে তিনশজন পুলিশের চাকরি হয়েছে আমার হাত দিয়ে। যেখানে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা ছিলো শতভাগ। এই ৩শ জন আগামী ৪০ বছর চাকরি করবে। তাদের সংসার চলবে। পাশাপাশি তারা দেশমাতৃকার সেবায় কাজ করবে। বিষয়টি ভাবতেই আমার আনন্দ হচ্ছে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, কুমিল্লা জেলা পুলিশ ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে ১ ফেব্রুয়ারি আবেদন শুরু হয়। ১২০ টাকায় আবেদন করেন চাকরি প্রার্থীরা। আবেদন চলে ২৮ ফ্রেব্রুয়ারী পর্যন্ত। ২৯ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। ৯ এপ্রিল মনোস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা। আবেদনে যোগ্য হয় ৪৭৮৭ জন। সব ধাপ শেষে ১৫০ জন ট্রেইনি রিক্রুট পদে উত্তীর্ণ হয়।

আরো পড়ুন